বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
পরিবারতন্ত্র নয়, সত্যিকারের জনগণের দল হবে বিআরপি

নবীনদের মূল চালিকাশক্তি কাজে লাগিয়ে কৃষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, শ্রমিক, ছাত্র-শিক্ষক, সাবেক সামরিক সদস্যসহ সবার মেলবন্ধনে সত্যিকারের জনগণের দল হয়ে উঠতে চায় বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি)। কালবেলার সঙ্গে আলাপচারিতায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ এ কথা বলেন। এ সময় দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

সাইফ বলেন, বিআরপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, যার মূল চালিকাশক্তি দেশপ্রেম, ন্যায়বিচার ও মানবকল্যাণ। এটি ক্ষমতার রাজনীতি নয়, সেবার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। যখন রাজনীতি থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন বিআরপি এসেছে আশার আলো নিয়ে। দেশে হতাশা, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবিচারের বিরুদ্ধে এক নীরব ক্রন্দনের জবাব হিসেবে এই দল গঠিত হয়েছে। দেশের শিকড় থেকে, সাধারণ মানুষের হৃদয়ের গভীর চাহিদা থেকেই তৈরি বিআরপি।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণি বা পেশা নয়, বরং আপামর জনসাধারণ যেমন—কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও সাবেক সেনা সদস্যদের মেলবন্ধন হলো বিআরপি। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হবে, যা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মর্যাদার ভিত্তিতে হয়ে উঠবে সত্যিকারের ‘জনগণের দল’। রাজনীতি হবে বিশ্বাস ও ভরসার স্থান, কোনো দলীয় পরিবারতন্ত্রের নয়।

ক্ষমতা না থাকলেও মানুষের জন্য কাজ করা যায় জানিয়ে সাইফ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে, স্বেচ্ছায় রক্তদান, সামাজিক সমস্যা ও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা জনগণের জন্যই কাজ করতে এসেছি।

তিনি বলেন, বিআরপির মূল দর্শন ‘সবার উপরে দেশ’—এই ছোট্ট বাক্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। আমাদের রাজনীতি স্বার্থনিরপেক্ষ, দায়িত্বশীল এবং দেশকেন্দ্রিক। এখানে ক্ষমতার লোভ নেই, আছে মানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত এক আদর্শিক সংগ্রাম।

সাইফুল্লাহ খান সাইফ বলেন, আমরা দুর্নীতি, মাদক ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। দুর্নীতি একটি জাতির শত্রু, আর মাদক হলো তরুণ সমাজ ধ্বংসের হাতিয়ার। আমরা চাই একটি নৈতিক, স্বাস্থ্যবান ও ন্যায্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি মানুষ সমান সুযোগ পাবে—চাকরিতে, শিক্ষায়, ন্যায়বিচারে।

সেনা ও জনতা আলাদা নয়, তারা একই জাতির সন্তান নীতিতে আমাদের অটল আস্থা জানিয়ে বিআরপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক মঞ্চে এই দুই পক্ষকে একত্রিত করে, গঠন কাঠামোতে সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্ব গড়ে তোলাই লক্ষ্য, যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখবে।

দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক, শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভর করার লক্ষ্যে একটি বাস্তবভিত্তিক ও সম্মাননির্ভর পরিকল্পনা গ্রহণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সাইফ বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—প্রতিরক্ষা শুধু সামরিক সক্ষমতার প্রশ্ন নয়, এটি জাতীয় গর্ব ও জনসুরক্ষার প্রতীক। এজন্য আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন, স্মার্ট অস্ত্র ও সেন্সরভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ড্রোন প্রযুক্তি ও এআই-ভিত্তিক গোয়েন্দা সক্ষমতা বৃদ্ধি, নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে।

প্রতিরক্ষা গবেষণায় ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশে তরুণ প্রকৌশলী ও গবেষকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি দুর্যোগ, মহামারি ও জাতীয় সংকটে সামরিক সহায়তার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের দক্ষতা সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে গঠনমূলক কাজে নিয়োগ করার ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক শান্তি মিশনে আরও সুদৃঢ় অংশগ্রহণ, সেনাসদস্যদের আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও স্বীকৃতি বৃদ্ধি, দ্বিপক্ষীয় মহড়া ও সামরিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করার পক্ষেও দলের অবস্থান ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্তব্য করুন