বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

‘আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের ভোটের বাক্স হবে একটাই’

বগুড়া ব্যুরো
বক্তব্য রাখছেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ইসলামপন্থিদের জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াত পূর্বের ঘোষিত যে কোনো আসনের প্রার্থী সরিয়ে নেবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশের সব ইসলামপন্থির ভোটের বাক্স হবে একটাই। আগামী নির্বাচনে সেই ঐক্যের সত্যিকারের বাস্তবায়ন জাতি দেখবে ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে বগুড়া শহরের ঐতিহাসিক টিটু মিলনায়তনে বগুড়া জেলা ও মহানগর ওলামা মাশায়েখ পরিষদ আয়োজিত বিশাল ওলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর একটি দল নিজেদের দেশের অঘোষিত মালিক মনে করছে। তারা অপরাধীদের থানা থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিচ্ছে। দেশব্যাপী চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে।

তিনি বলেন, অনেক এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা একটি দলের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রদর্শন করছেন। এসব দলকানা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের সেসব পদে বসাতে হবে। প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে দেশে কোনোভাবেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সরকারকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া যেনতেনভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় বসানোর অপচেষ্টা হলে দেশের আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে।

ওলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ মাওলানা আলমগীর হুসাইনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ শায়েখ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ, কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগের সেক্রেটারি ড. খলিলুর রহমান মাদানী, জামায়াতে ইসলামী বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, শেখ হাসিনার সরকার জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে হত্যা করেছে। এসব হত্যার সঙ্গে জড়িত বিচারক, আইনজীবী, সাক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা যেখানে ঘাপটি মেরে আছে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করে হাজারো শহীদের সঙ্গে বেইমানি জনগণ মেনে নেবে না।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, বগুড়া মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল, জামিল মাদ্রাসার মুঈনে মুহতামিম মুফতি মাওলানা আতাউল্লাহ নিজামী, কারবালা মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা কাজী ফজলুল করিম রাজু, ইসলামী আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আ. ন. ম মামুনুর রশীদ, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, খেলাফত মজলিসের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মামুন রহমানী, ওলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া জেলা সভাপতি মাওলানা মমতাজ উদ্দিন।

এ ছাড়া স্থানীয় আলেম-ওলামারা সম্মেলনে বক্তব্য দেন। সম্মেলনে ১০ দফা ঘোষণা পাঠ করে শোনানো হয়। সবশেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল বাসেত ও মহানগর মহানগর সেক্রেটারি ড. আবু সালেহ মামুন।

মন্তব্য করুন