বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
ওমর ফারুক, কলম্বো থেকে
বাংলাদেশের সিরিজ বাঁচানোর লড়াই

দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে বাংলাদেশের পুরোপুরি মনোযোগ ব্যাটিং বিভাগে। কলম্বোর অনুশীলনের ছবিই সে কথা বলে। নেটে লম্বা সময় ঘাম ঝরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়রা। তবে দেখা যায়নি লিটন দাসকে; একের পর এক ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে তার জায়গা পাওয়া নিয়েও আছে শঙ্কা। পুরো অনুশীলনের খণ্ডচিত্রে অল্প কিছু সময়ের জন্য ক্যাচ অনুশীলনে দেখা গিয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ নাঈমদের। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়াতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে মিরাজের নেতৃত্বাধীন দলটি। অনুশীলন নেটেও তার ছাপ রেখেছেন ক্রিকেটাররা। আর সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা উদ্বোধনী ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিমও শোনালেন সিরিজে টিকে থাকায় এখন চোখ তাদের।

প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হারের কোনো ব্যাখ্যা কিংবা বিশ্লেষণ হয় না। ১ উইকেটে ৯৯ থেকে ৮ উইকেটে ১০৫ রান—অবিশ্বাস্য শব্দটাও যেখানে রীতিমতো হার মেনে নেয়। এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি অধিনায়ক থেকে শুরু করে দলের কেউই। উল্টো মানসিকভাবে বিপর্যস্তই মনে হয়েছে তাদের। তারপরও এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চান তারা। সিরিজ সমতায় এনেই ক্যান্ডির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ভাবনা টিম ম্যানেজমেন্টের। তানজিদের ভাষায়ও সেটা ফুটে উঠেছে সংবাদ সম্মেলনে, ‘অবশ্যই, পরের (আজকের) ম্যাচে আমাদের কামব্যাক করার সুযোগ আছে। কারণ, তিন ম্যাচের সিরিজ—একটা ম্যাচ শেষ হয়েছে। পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরা সিরিজে টিকে থাকব।’ কলম্বোর উইকেট অতটা রানপ্রসবা নয়। কিন্তু এমনও নয় যে এমন ব্যাটিং বিপর্যয় দেখা লাগতে পারে। অন্তত শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দেখেও সেটা অনুমান করার মতো ছিল। একপাশে একজন থিতু হতে পারলে বড় রানেরও দেখা মেলে, যেটা দেখিয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আশালঙ্কাও।

বাংলাদেশের হয়ে আশালঙ্কার মতো কিছু করার সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ। কিন্তু দারুণ এক ক্যাচে তার ফিরে যাওয়ায় সব এলোমেলো হয়ে যায়। উইকেটে থাকতে পারলে ভিন্ন কিছু সম্ভব হতো বলে আক্ষেপও ঝরেছে তার কণ্ঠে, ‘দেখুন—এখানে যে রকম উইকেট, তাতে সবচেয়ে বেশি দরকার হচ্ছে যারা উইকেটে থিতু হবে, তাদের অনেক লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। আমি আর শান্ত ভাই (নাজমুল হোসেন) যেভাবে থিতু হয়েছিলাম ওখানে, যদি আমরা কয়েকটা ওভার থাকতে পারতাম—অন্তত ৫ থেকে ১০ ওভার। আরও খানিকটা থিতু হতে পারতাম, তাহলে ম্যাচটা অনেক ভালোভাবে বেরিয়ে আসত এবং পরবর্তী ব্যাটারদের জন্য সহজ হয়ে যেত।’ দ্বিতীয় ম্যাচে তাই সিরিজ বাঁচাতে এখন পুরোনো কৌশলকেই সতীর্থদের করতে বললেন তিনি, ‘আমার বার্তা থাকবে যারা থিতু হবে তাদের যেন শেষ পর্যন্ত খেলার চেষ্টা করতে হবে, ম্যাচটা বের না হওয়া পর্যন্ত। কারণ নতুন ব্যাটার যদি উইকেটে যায়, তাহলে তার জন্য একটু কঠিন সময়।’

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন লঙ্কান লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দ্বিতীয় ম্যাচেও তানজিদদের বড় ভয়ের কারণ হতে পারে তার রিস্ট স্পিন দক্ষতা। কোচ অবশ্য নাকি সেটা মোকাবিলা করার বার্তা দিলেন এভাবে, ‘হাসারাঙ্গার বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটার যারা থাকবে, তাদের বেশি খেলা উচিত। কারণ বাঁহাতিদের বিপক্ষে সে অত কার্যকর নয়, যতটা ডানহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে। এরকম কিছু তথ্য আমাদের দেওয়া হয়েছে, যেগুলো সামনের ম্যাচে সবাই কাজে লাগাবে আশা করি।’ তথ্যটা গোপনীয় ছিল কি না, সেটা ভিন্ন আলোচনা। তবে ডানহাতি ব্যাটারদের জন্য হাসারাঙ্গা যে কতটা ভয়ংকর—সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

মন্তব্য করুন