বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
ক্রীড়া প্রতিবেদক, কলম্বো থেকে
তরুণদের ‘ভরসা’ দিতে বললেন জয়সুরিয়া

সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মুশফিকুর রহিমরা থাকলে বাংলাদেশের অনুশীলনে বাড়তি মনোযোগ দেখা যেত সংবাদকর্মীদেরও। কে কী করছেন, কতটুকু অনুশীলন করছেন—সেসব তথ্যও মাঝে মাঝে খবরের বড় শিরোনাম হয়ে উঠত। কিন্তু সম্প্রতি তা আর দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বদলে গেছে। কলম্বোতেই গতকাল বাংলাদেশের অনুশীলন ঘিরেও তাই বাড়তি মনোযোগের দেখা মেলেনি সংবাদকর্মীদেরও। প্রতিদিনের মতোই রুটিন কাজ করেছেন সবাই। কারণটা এখন স্বাভাবিকও। বাংলাদেশের ক্রিকেটে পঞ্চপাণ্ডব অধ্যায় মোটামুটিভাবেই সমাপ্ত।

ধাপে ধাপে জাতীয় দল ছেড়েছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। সাকিব আল হাসান এখনো অবসরে না গেলেও দলে নেই অনেকদিন হলো। তাদের কাউকে ছাড়া দুই দশক পর কোনো ওয়ানডে সিরিজে খেলছে বাংলাদেশ—সেটাও আবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে। তবে পঞ্চপাণ্ডবের বাইরে বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে তাদের। ৬ রান তুলতেই ৭ ব্যাটারকে হারানোর মতো দুঃসহ স্মৃতি এখনো তরতাজাই। ক্রিকেটে এই প্রজন্ম বদলকে ইতিবাচক বলছেন শ্রীলঙ্কার প্রধান কোচ সনাথ জয়সুরিয়া। তরুণদের ওপর বিশ্বাস রেখে তাদের ভরসা দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

২০১৪ সালের পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটেও প্রজন্ম বদলের ছাপ পড়েছিল। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, তিলকারত্নে দিলশানদের পর নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত হতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগোলেও এখনো সেই পুরোনো শক্তিতে ফিরতে পারেনি তারা। এটাকে উদাহরণ টেনে জয়সুরিয়া বলেন, ‘প্রতিটি দেশই একটা সময়ে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। শ্রীলঙ্কাও গিয়েছে খুবই খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে। আত্মবিশ্বাসটাই তখন মূল ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তখন নতুনদের সুযোগ দেওয়া উচিত এবং তাদের ভরসা দেওয়া উচিত। আপনি যদি তাদের আত্মবিশ্বাস না দেন, তারা ভেঙে পড়বে।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটে তরুণ আর অভিজ্ঞ বলতে এখন সবই সমান বলা চলে। প্রায় এক দশকের মতো জাতীয় দলে খেলেও এখনো পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছেন না লিটন দাস, সৌম্য সরকারের মতো ক্রিকেটাররা। বিভিন্ন সিরিজে তাই তাদের ওপর ভরসাও হারাতে দেখা গেছে জাতীয় দলের নির্বাচকদের। তরুণদের মধ্যে মোহাম্মদ নাঈম, তাওহীদ হৃদয়, তানজিদ হাসান তামিম কিংবা শামীম পাটোয়ারীদের অবস্থাও মোটামুটি একই বলা চলে। পারফরম্যান্সের তেমন ধারাবাহিকতা দেখা মেলে না। এরপর আশপাশের সমালোচনায় দল থেকেও বাদ পড়ে যান অনেকেই। জয়সুরিয়া বললেন তাদের ওপর ভরসার জায়গাটা নিশ্চিত করা, ‘এটা নিশ্চিত করতে হবে যে নতুনদের যেন সেই ভরসাটা দেওয়া হয়। যখনই কোনো দেশ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, তখন উচিত নতুনদের সুযোগ দেওয়া এবং তাদের ওপর ভরসা রাখা। এতে তারা ভালো করবে ভবিষ্যতে।’ আর এ ধরনের কাজ টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের কাছ থেকেই দেখতে চান এই লঙ্কান কিংবদন্তি ক্রিকেটার, ‘যদি টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক নতুনদের ভরসা দেয়, সেটাই মূল বিষয়। তাদের চাপে ফেলা যাবে না। আপনি যদি তাদের ওপর ভরসা রাখেন, তাহলে তারা ভালো করবেই।’

মন্তব্য করুন