বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
ওমর ফারুক, কলম্বো থেকে
আত্মবিশ্বাস থেকেই মিলল জয়

দ্বিতীয় ওয়ানডের জয়ের নায়ক তানভীর ইসলামের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজকে দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন। প্রশ্ন জেগেছিল, ‘অধিনায়কও এলেন!’ অবশ্য অধিনায়কের আসাটাও স্বাভাবিকই বলা চলে। টানা সাত ওয়ানডে হারের পর জয়ের গল্প লেখা—কম স্বস্তির তো নয়! পছন্দের সংস্করণে একের পর এক ম্যাচ হেরে যখন বিধ্বস্ত দল; তখন নেতৃত্ব কাঁধে পেয়েই দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের খোঁজ মেলালেন মিরাজই। এমন জয়ের পর মিরাজ বললেন, আত্মবিশ্বাস থেকেই মিলেছে। আর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে কিংবা মেডেন ম্যাচসেরা তানভীর সবকিছুর জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন, ‘আল্লাহ অনেক দিন পর মুখ তুলে তাকিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচসেরা হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।’ শুরুর দুই ওভারে ২২ রান দিয়ে। এরপর দশ ওভারে ৩৯ রানে ৫ উইকেট। কীভাবে বদলে গেলেন, তার ব্যাখ্যা এভাবে দিলেন তানভীর, ‘প্রথম আমরা যখন ব্যাটিং করেছি, যে রান করেছিলাম। অধিনায়ক, টিম ম্যানেজমেন্ট সবাই বলেছিলেন আমরা এটা ডিপেন্ড করতে পারব। কারণ, আমরা যদি এভাবে উইকেট হারাতে পারি, আমরা বিশ্বাস করেছিলাম আমরাও পারব। প্রথম দুই ওভারে ২২ রান দেওয়ার পর অধিনায়ক আমার পাশে এসে বললেন যে, বোলাররাই মার খায়। তুই পারবি। তোরে একটা বিশ্বাস দিলাম, সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। ডিফেন্সিভ বোলিংয়ের প্রয়োজন নেই, তোর উইকেট নিতে হবে। অধিনায়কের কথামতো চেষ্টা করে আলহামদুলিল্লাহ ভালো কিছু হলো।’

কলম্বোতে ১৬ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। সিরিজও এখন ১-১ ব্যবধানে সমতায়। তবে ম্যাচটি পেন্ডুলামের মতো যেভাবে দুলছিল, তাতে রীতিমতো দর্শকদের মনে ভয় জেগে বসেছিল! এ বুঝি আবারও তীরে এসে তরী ডোবার গল্প। শেষ পর্যন্ত জয়টাই স্বস্তির। জয়ের ব্যাখ্যায় মিরাজ বলেন, ‘আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি এবং আরও কিছু জায়গায় যদি আমরা আরও ভালো করতাম। তাহলে ভালো হতো। বিশেষ করে ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে পারিনি দুই ম্যাচে। অবশ্যই ৫০ ওভার ব্যাটিং করা উচিত ছিল।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচেই পুরো সময় ব্যাটিং করতে পারেনি বাংলাদেশ। কলম্বোতে একই সমস্যার মুখোমুখি স্বাগতিকরাও। তবে এক দুজনের বড় ইনিংস খেলতে হবে, এমন পরিকল্পনায় যে বাংলাদেশ সফল—তা মিরাজও জানালেন, ‘আমাদের ইমন খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। ওর আর শান্তর জুটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। তাওহীদ হৃদয় উইকেট হারানোর পর যেভাবে একপাশ আগলে রেখেছিলেন, সেটাও ইতিবাচক ছিল। কিন্তু আমরা জুটি বড় করতে পারিনি, যেটা চিন্তার।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচেই জুটি গড়েও সেটা বড় করতে না পারার ঘাটতি মিলেছে মিরাজদের মাঝে। প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও বারবার থিতু ব্যাটারদের ভুল করতে দেখা গেছে। মিরাজ বলছেন, এখানে ভালো করলেই দৃশ্যপট বদলে যেত। তবে জেতার জন্য আত্মবিশ্বাস ছিল সবার মাঝেই, সেটা উল্লেখ করে মিরাজ বলেন, ‘প্রথম ম্যাচটা আমরা যেভাবে হেরেছি, আমরা কেউই মেনে নিতে পারিনি। খেলাটা আমাদের দিকে ছিল, কিন্তু একটা ওভারে সব বদলে যায়। তারপরও আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি, আমরা ক্যামব্যাক করতে পারি। আজকেও (গতকাল) আমাদের ভেতর এই বিশ্বাসটা ছিল। আমরা অনেক রকম ব্যাটিং ধসের পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’ শেষ দিকে তানজিম সাকিবের ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংসকে অনেক বড় করেই দেখলেন অধিনায়ক, ‘সাকিব যেভাবে হাসারাঙ্গাকে আক্রমণ করেছে, ওর ৩৩ রান জয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ উইকেটে ২২০ আর ২৫০ দুই রকম দৃশ্য গড়ে দেয়। সবার ভেতর আত্মবিশ্বাস ছিল, আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’

মন্তব্য করুন